
মুহুর্ত অনলাইন: তিনটি ভারতীয় রাফায়েল যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এক জ্যেষ্ঠ ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তিনি সিএনএন-কে জানিয়েছেন, পাকিস্তান ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যা ফরাসি নির্মিত আধুনিক যুদ্ধবিমানের প্রথম যুদ্ধক্ষেত্রের ধ্বংস বলেও বিবেচিত হচ্ছে।
বুধবার পাকিস্তান দাবি করে যে তারা পাঁচটি ভারতীয় বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি ছিল রাফায়েল জেট। ফরাসি কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে যে পাকিস্তান কি আদৌ একাধিক রাফায়েল জেট গুলি করেছে কিনা।
অধিকৃত কাশ্মীরে বিধ্বস্ত একটি বিমানের ধ্বংসাবশেষে ফরাসি কোম্পানির লেবেল দৃশ্যমান হলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি রাফায়েল জেটের কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাফায়েল জেট নির্মাতা ডাসল্ট এভিয়েশন এ বিষয়ে সিএনএনের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
ফরাসি সামরিক বাহিনী এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রাফায়েল ধ্বংসের ঘটনাটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য রাজনৈতিকভাবে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। কারণ অতীতে এই বিমান ক্রয় নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা গিয়েছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই অভিযানের পর মোদীকে রাজনৈতিকভাবে কী মূল্য দিতে হবে, তা তিনি খুব শীঘ্রই অনুধাবন করতে পারবেন। পাকিস্তানি পাইলটদের নিশানায় থাকা তিনটি রাফায়েল জেট ভূপাতিত হওয়ার ঘটনাটিও পুরো প্রেক্ষাপটকে আরও জটিল করে তুলেছে।
বিদেশি সংবাদ সংস্থাগুলো নিশ্চিত করেছে যে ভারতীয় বিমান বাহিনীর তিনটি বিমান ধ্বংস হয়েছে, এবং পাকিস্তানের লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এর মধ্যে তিনটি ছিল রাফায়েল জেট।
রাফায়েল কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১২ সালের জানুয়ারিতে, যখন ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ফ্রান্স থেকে ১২৬টি ডাসল্ট রাফায়েল যুদ্ধবিমান কেনার ঘোষণা দেয়। ১৮টি বিমান সরাসরি ফ্রান্স থেকে আসার কথা ছিল, বাকি ১০৮টি ভারতে তৈরি হতো।
তবে দীর্ঘ আলোচনার পরও চুক্তির বাস্তবায়ন এগোয়নি। ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১২৬টি বিমানের পরিবর্তে মাত্র ৩৬টি সম্পূর্ণভাবে তৈরি বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের মাধ্যমে বিমান তৈরি বাতিল করা হয়।
এই সিদ্ধান্ত বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে ফেলে মোদী সরকারকে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী দাবি করেন, চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক। কিন্তু মোদী সরকার জাতীয় নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করে।
বিরোধীরা অভিযোগ তোলে, মোদীর ফ্রান্স সফরের ১৩ দিন আগে অনিল আম্বানি ‘রিলায়েন্স ডিফেন্স’ নামে একটি নতুন সংস্থা গঠন করেন, যা পরে ফরাসি অংশীদার হিসেবে নিযুক্ত হয়। যদিও অনিল আম্বানি ও তার কোম্পানি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চুক্তির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস মুখপাত্র মনীশ তিওয়ারি। তিনি বলেন, তিনগুণ দামে বিমান কেনা হয়েছে এবং অনিল আম্বানি এতে লাভবান হয়েছেন। যদিও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল বীরেন্দ্র সিং ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন চুক্তিটিকে স্বচ্ছ বলে দাবি করেছেন।
ঘটনার নাটকীয় মোড় আসে যখন প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপকেই অংশীদার করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন।” পরে তিনি এনডিটিভিকে একই বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করেন।
শেয়ার করুন
- Click to share on Facebook (Opens in new window) Facebook
- Click to print (Opens in new window) Print
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window) WhatsApp
- Click to email a link to a friend (Opens in new window) Email
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window) LinkedIn
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on X (Opens in new window) X