চৌধুরী মাশকুর সালাম: বাংলাদেশের আইন মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তি আমাদের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ভারতে প্রশিক্ষণের অনুমতি প্রদান করেছে। ভুপালের ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি এবং স্টেট জুডিসিয়াল একাডেমিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য এই প্রশিক্ষণে ৫০ জন বিচারক অংশ নেবেন।
সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, প্রকৃতপক্ষে এটি আমাদের বিচার বিভাগের সার্বভৌমত্বের প্রতি একটি নীরব আক্রমণ।
২০১৭ সালে হাসিনার স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্থাপিত হলেও, এর মূল উদ্দেশ্য কি সত্যিই বিচার বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধি, নাকি এটি পররাষ্ট্রের নীরব নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার একটি উদ্যোগ?
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা একটি দেশের গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ। উপরন্তু, বিচারিক প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা কি আমাদের বিচারিক ক্ষমতাকে দুর্বল করে তুলবে না?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিচারপতিদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি থাকে, তবে তা হয় নিজেদের বিচারিক কাঠামোর মধ্যে। কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের বিচারকরা কি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতায় স্বাধীন থাকতে পারবেন?
নাকি এটি হবে ন্যায্যতা ও বিচারিক মানদণ্ডের ওপর একটি অদৃশ্য শৃঙ্খল?
প্রশিক্ষণের সমস্ত ব্যয়ভার ভারত সরকার বহন করবে বলে জানানো হয়েছে। এমন অর্থনৈতিক সুবিধা কি আমাদের উপর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের মাধ্যম হতে পারে? বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে এমন বিদেশি সহায়তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।
সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে অনুমোদিত হলেও, এই বিষয়ে দেশের স্বার্থ রক্ষা এবং জনগণের আস্থা সুনিশ্চিত করার জন্য সরকারের উচিত একটি স্বচ্ছ ব্যাখ্যা প্রদান। আমাদের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকা উচিত।
বিচার বিভাগের উন্নয়ন অবশ্যই প্রয়োজন, তবে তা হতে হবে আমাদের নিজস্ব কাঠামোর মধ্যে এবং আমাদের নিজেদের শর্তে। বিচারিক স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের এই অমূল্য সম্পদকে রক্ষা করতে হবে যেকোনো মূল্যে।
মুহুর্ত ২৪ | প্রজন্মের বার্তাবাহক
www.muhurto24.com
বিশ্বময় সবসময় সর্বশেষ খবর জানতে চোখ রাখুন।
সাহিত্য, উদ্ভাবন, প্রযুক্তি, সংবাদ সহ যেকোন বিষয়ে লেখা পাঠাতে পারেন এই ই-মেইলে [email protected]
Muhurto24 মুহুর্ত ২৪ (অনলাইন নিউজ সার্ভিস) © ২০২১ - ২০২৪