উপজেলা পর্যায়ে সরকারী অর্থায়ণে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হবে – প্রধান উপদেষ্টা

Dr. Younus

উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে সারা দেশের উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্য মেলা আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এ ধরনের মেলা উদ্যোক্তাদের নিজেদের সৃজনশীলতা ও উদ্যোগ প্রদর্শনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী বক্তব্য: বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিসিএফসি) ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন,

“মানুষ মাত্রই উদ্যোক্তা। মানুষের কাজই হলো নিজের মন মতো কাজ করা। বাণিজ্য মেলা মানুষকে নিজের উদ্যোগ ও সৃজনশীলতাকে তুলে ধরার সুযোগ দেয়।”

সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ: এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ আটটি দেশের ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেছেন। দেশগুলো হলো—ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।

মাসব্যাপী এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা এবং শিশুদের জন্য (১২ বছরের নিচে) ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীরা বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।

পরিবহন ও ই-টিকিটিং সুবিধা: পূর্বাচলে মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসি ২০০টিরও বেশি বাস চালু করেছে। কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে এসব বাস চলাচল করবে। বাসগুলো সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত শাটল সেবা দেবে।

এছাড়া প্রথমবারের মতো মেলায় ই-টিকিটিং চালু করা হয়েছে, যা অনলাইনে স্টল বরাদ্দ থেকে শুরু করে প্রবেশপত্র সংগ্রহ পর্যন্ত সবকিছু সহজ করে দেবে।

বিশেষ আয়োজন: এবারের মেলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিকে স্মরণ করে তৈরি করা হয়েছে জুলাই চত্বর ও ৩৬ চত্বর। তরুণদের রপ্তানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন।

বাণিজ্য মেলার ঐতিহ্য: ১৯৯৫ সাল থেকে শুরু হওয়া ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রতিবছরই শেরেবাংলা নগরে অনুষ্ঠিত হতো। তবে পূর্বাচলে স্থায়ীভাবে মেলার আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নতুন ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্য মেলা আয়োজনের পরিকল্পনা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।